কালীমায়ের আগমনে অমাবস্যা রাতের পবিত্রতা

 আমাবস্যা হচ্ছে এমন এক রাত যেই রাতে চাঁদের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। চারপাশের নিস্তব্ধতা ও এক গাড়ো অন্ধকারের আস্তরণ। এই অন্ধকার জন্য শুধু প্রকৃতির নয় মানুষের মনে বিরাজ করে। ভয় হতাশা এই সবকিছু মিলিয়ে অমাবস্যা যেন এক নিঃশব্দ রাত্রি। 

 



সনাতন ধর্মানুসারে এই রাতে নেগেটিভ শক্তি অর্থাৎ ডাকিনী যোগিনী ভূত-প্রেত ইত্যাদি সবকিছু ঘুরে বেড়ায়। এই আমাবস্যার রাতে মা কালীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। অমাবস্যার রাতে জেগে ওঠেন সেই মহাশক্তি মা কালি, মা কালী যিনি ধ্বংসের মধ্যে দিয়ে নতুন সৃষ্টি সূচনা করে।

পেজ সূচিপত্র

আমাবস্যা ও কালী পূজার আধ্যাত্মিক সম্পর্ক

কালী পূজার ইতিহাস ও উৎপত্তি

মা কালীর আগমনে পাপ ও অজ্ঞানতার বিনাস 

ঘরে কালী পূজার নিয়ম ও বিধি

ধুপ, দ্বীপ ও প্রদীপ জ্বালানোর অর্থ

তন্ত্রসাধনা ও আমাবস্যা তাৎপর্য

কালী পূজা বলি দেওয়ার বিধি

মা কালী আশীর্বাদের জীবনের নতুন অধ্যায়

লেখকের শেষ কিছু কথা

আমাবস্যা ও কালী পূজার আধ্যাত্মিক সম্পর্ক

এই আলোর উৎসব দীপা বলি সারা দেশে মহাসভয়ার সাথে পালিত হয়। দিনে এই দিন প্রতিটি সনাতনের কাছে বিশেষ একটি দিন কারণ এই দিনে মা কালীর পূজা আয়োজন করা হয়। আমাবস্যার রাত হচ্ছে এমন একটি অন্ধকারচ্ছন্ন রাত যা দেবীকালীন আরাধনা করা ও তন্ত্র সাধনা করার জন্য খুবই শুভ একটি রাত হিসেবে ধরা হয়। বিশেষ করে এই তিথির কার্তিক মাসে আমাবস্যায় দীপান্বিতা কালী পূজা সমস্ত অন্ধকারকে দূরে সরিয়ে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভশক্তির পুণ্য জন্মের একটি উপায় হিসেবে দেখা হয়। তান্ত্রিকদের মতে অমাবস্যা হলো অত্যধিক এমন একটি সময় কারণ এই রাতে সকল শক্তি অনেক শক্তিশালী হয়ে থাকে। ফলে এই আমাবস্যার রাতে মা কালীর সাধনা করা হয়ে থাকে। দেবিকালির রূপ ভয়ংকর, তবে সেই ভয়ংকর রূপের মধ্যেও রয়েছে মায়ের অসীম মমতা, ভালোবাসা ও সুরক্ষা। দীপিকালি এই অমাবস্যা রাতে সকল অন্ধকারকে নাশ করে আলোর প্রতীক আনেন।

কালী পূজার ইতিহাস ও উৎপত্তি

মা কালি কে মৃত্যু অন্ধকার ও সময় দেবী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সনাতন ধর্ম অনুসারে কালি শব্দটির প্রথম আবির্ভূত হয়েছিল অথর্ব বেদে ১২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের থেকে ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে। সনাতন ধর্ম অনুসারে বলা হয়েছে, কালি শব্দটি এসেছে কাল নামক শব্দ থেকে, যার অর্থ সময়। নতুন ধর্মের প্রধান পুস্তক বেদে তাকে আগুনের অন্ধকার দিকের প্রতিফলিতর সাথে তুলনা করা হয়। কালী নামের সংস্কৃত ভাষার অর্থ হল যে কালো বা যে মৃত্যু, কিন্তু তিনি চতুর্ভুজা কালি, কৌশিকী বা  ছিন্নমস্তা নামে পরিচিত। হিন্দু শাস্ত্র মতে মা কালীর ইতিহাস খুঁজলে দেখা যায় মা কালী হচ্ছেন দেবী দুর্গার আরেকটি রূপ। মহাভারতে কাল রাত্রি বা কালি নামে আরও একটি দেবীর উল্লেখ্য পাওয়া যায়। কার্তিক মাসে অমাবস্যা তিথিতে কালী পূজা বেশ অনেক বড় ও জাঁকজমক ভাবে পালন করা হয়, এছাড়াও মাঘ মাসে চতুর্দশী তিথিতে রডন্তি কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে কাশিনাথ রায়ের রচিত শ্যামা সর পূজা বিধবা কালীশ্বর পূজা বিধি গ্রন্থে সর্বপ্রথম এই কালী পূজার উল্লেখ্য পাওয়া যায়। বাংলার সপ্তদশ শতকে কালীপুজোর অনেক কিছুই প্রমাণ পাওয়া গেছে। তান্ত্রিক কৃষ্ণ নন্দ বাংলায় প্রথম মা কালীর মূর্তি বা পূজা শুরু করেন। কাজ করি বঙ্গপাধ্যায় লিখেছেন কৃষ্ণানন্দ স্বয়ং প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করে কালীপূজা করতেন, তারপর থেকেই পুরো বাংলা জুড়ে সকল সনাতনদের মধ্যে ধীরে ধীরে কালী পূজা প্রচলন হতে থাকে।  

মা কালীর আগমনে পাপ ও অজ্ঞানতার বিনাস 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url